মিরপুর, ৩০ অক্টোবর: মিরপুর টেস্টে ঐতিহাসিক জয় তুলে নিল বাংলাদেশ। এই প্রথমবার ইংল্যান্ডকে টেস্টে হারাল পদ্মাপারের দেশটি। বাংলাদেশের দেওয়া জয়ের জন্য ২৭৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাটে নামা ইংল্যান্ড অলআউট হয়ে যায় ১৬৪ রানে। শেষ ৬৪ রানে ইংল্যান্ডের ১০ উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশ ম্যাচ জেতে ১০৮ রানে। ১০ উইকেটই পড়েছে তৃতীয় দিনের শেষ সেশনে। প্রথম ইনিংসের পর দ্বিতীয় ইনিংসেও ৬ উইকেট নিয়ে মেহদী মিরাজ নিয়েছেন ১২টি উইকেট।
২৭৩ রানের তাড়া করতে নেমে ইংল্যান্ডের শুরুটা ভালই করেন দুই ওপেনার অ্যালিস্টার কুক ও বেন ডাকেট। ডাকেট তুলে নেন কেরিয়ারের প্রথম হাফ সেঞ্চুরি। ইংল্যান্ড চা বিরতিতে যায় ২৩ ওভারে বিনা উইকেটে ১০০ রানে। তবে চা বিরতি থেকে ফিরেই ইংল্যান্ড শিবিরে জোড়া আঘাত হানে বাংলাদেশ। বিরতির পর প্রথম বলেই বাংলাদেশকে ব্রেক থ্রু এনে দেন মিরাজ। তরুণ অফস্পিনারের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন ফিফটি করা বেন ডাকেট (৬৪ বলে ৫৬)। পরের ওভারে সাকিব আল হাসানও প্রথম বলেই ফিরিয়ে দেন প্রথম ইনিংসে অর্ধশতরান করা জো রুটকে।
এর কিছুক্ষণ পরেই জোড়া আঘাত হানেন মিরাজ। একই ওভারে তিনি ফিরিয়ে দেন গ্যারি ব্যালান্স ও মঈন আলীকে। মিরাজের দ্বিতীয় বলে শট খেলতে গিয়ে মিডঅফে তামিম ইকবালের হাতে ক্যাচ দেন ব্যালান্স (১৪ বলে ৫)। শেষ বলে এলবিডব্লিউ হন মঈন। নিজের পরের ওভারে কুককেও ফিরিয়ে দেন মিরাজ। এবার ক্যাচ। সিলি পয়েন্টে দারুণ ক্যাচ নেন মুমিনুল হক। ইংলিশ অধিনায়ক করেন ৫৯ রান। বিনা উইকেটে ১০০ থেকে ইংল্যান্ডের স্কোর তখন ৫ উইকেটে ১২৭। এরপর জনি বেয়ারস্টোকেও ফিরিয়ে দেন মিরাজ। তাতে কেরিয়ারের প্রথম দুই টেস্টে তৃতীয়বার ইনিংসে পাঁচ উইকেটের স্বাদ পেয়ে যান এই অফস্পিনার। স্লিপে শুভাগত হোমকে ক্যাচ দেন বেয়ারস্টো (৮ বলে ৩)। ইংল্যান্ডের স্কোর তখন ৬ উইকেটে ১৩৯।
তবে মূল নাটক শুরু হয় সাকিবের করা ইনিংসের ৪৩ ওভারে। একই ওভারে ৩ উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশেকে জয়ের কাছাকাছি নিয়ে যান বিশ্বের এই অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার। তৃতীয় ও চতুর্থ বলে বেন স্টোকস ও আদিল রশিদকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও জাগিয়েছিলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত হ্যাটট্রিকটা না হলেও, শেষ বলে তুলে নেন জাফর আনসারির উইকেট। দু’ওভার পরে আসে সেই বিখ্যাত সময়। মিরাজের বল আঘাত হানে স্টিভেন ফিনের প্যাডে। জোরালো আবেদন করেন বাংলাদেশের খেলোয়াড়েরা। আঙুল তোলেন আম্পায়ার ধর্মসেনা। সেই সঙ্গে ঐতিহাসিক জয়ের উৎসবে মাতেন সাকিব-মুশফিক-মিরাজরা।