বিশ্বের অন্যতম সেরা ঘরোয়া টি-২০ লিগ আইপিএলের ১২ তম আসর বসতে যাচ্ছে ২০১৯ সালে। ইতোমধ্যেই দল গোছাতে শুরু করেছে আসরে অংশ নিতে যাওয়া দলগুলো তবে আনুষ্ঠানিক নিলাম হবার কথা রয়েছে ১৬ ডিসেম্বর গোয়াতে। আইপিএলে খেলতে চেয়ে যে সকল খেলোয়াড় নাম জমা করেছেন আইপিএল গভর্নিং বোর্ডের কাছে সেখান থেকে যাচাই বাছাই করে নিলামে তোলা হবে ক্রিকেটারদের নাম। অন্যদিকে আগের আসরে খেলা ক্রিকেটারদের দলে ধরে রাখার নিয়ম মেনেই প্রতিটি ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো ক্রিকেটারদের তালিকা চূড়ান্ত করায় মনোনিবেশ করেছে।
গত আসরে রয়্যাল চেলেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু আইপিএল শেষ করেছে ৬ষ্ঠ অবস্থানে থেকে তাই ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য এই আসরে বাড়তি নজর দিবে এই দলের ফ্র্যাঞ্চাইজি এতে কোনো সন্দেহ নেই। ব্যাটিং নির্ভর দল বেঙ্গালোরু ২০১৯ আসরে নিজেদের তাবুতে শক্ত খুঁটি গেড়ে বসতে চাইবে স্বাভাবিকভাবেই।
তবে কারা হতে পারেন দলটির ভরসার প্রতীক? দেখে নেয়া যাক এমনই ৫ জন ক্রিকেটারের তালিকা।
১। রাজনীশ গুরবানি
ঘরোয়া ক্রিকেটে দারুণ পারফর্ম করা গুরবানি লাল বল ও সাদা বলে সমানভাবে দক্ষতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছেন। তরুণ এই পেসার যেকোনো ধরণের পিচেই সুইং বল করতেও সক্ষম। বিধর্বের এই পেসার টি-২০ ফরম্যাটে ২৬.০৭ গড়ে ও ২০.৩০ স্ট্রাইকরেটে ১৩ উইকেট নিয়েছেন। যেখানে ওভারপ্রতি গড় ছিল ৭.৭০।
উমেশ যাদবের পাশাপাশি যদি দেশীয় বোলার হিসেবে গুরবানিকে তাবুতে ভেড়াতে পারে বেঙ্গালোরু ফ্র্যাঞ্চাইজি তাহলে প্রতিপক্ষ দলের রান রান হয়তো কিছুটা আটকানো সম্ভব হবে দলটির। অন্যদিকে আইপিএলে নিজেদের বোলিং নিয়ে বরাবরই ভুগতে থাকা বেঙ্গালোরুর কপালে চিন্তার যে ভাঁজ ছিল তা দূর করতে গুরবানিকে দলে অন্তর্ভুক্ত করতে পারে দলটি।
২। ইয়ন মরগান
ইংল্যান্ড দলের ক্যাপ্টেন ইয়ন মরগান ওয়ানডেতে ইংল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হিসেবেই রয়েছেন বর্তমানে। অন্যদিকে মিডল অর্ডার এই ব্যাটসম্যান যেকোনো সময় আক্রমণাত্মক রূপ ধারণ করে অভিজ্ঞ শটের মাধ্যমে প্রতিপক্ষ বোলিং লাইনআপ গুঁড়িয়ে দিতে পারেন।
বিরাট কোহলি, এবি ডি ভিলিয়ার্স, ব্রেন্ডন ম্যাককালামদের সাথে যদি ইয়ন মরগান ২০১৯ আসরে বেঙ্গালোরুর হয়ে মাঠ মাতাতে পারেন তাহলে দলের রান তোলার ভাবনাটা হয়তো দূর হতে পারে স্থায়ীভাবেই।
৩। প্রসিধ কৃষ্ণ
আইপিএল ২০১৮ আসরের নিলামে কলকাতা নাইট রাইডার্স প্রসিধকে দলে ভেড়াতে অসম্মতি প্রকাশ করলে অবিক্রিত থেকে যান প্রসিধ। যদিও অনুর্ধ্ব-১৯ দলে চোখধাঁধানো পারফরম্যান্সের কারণে কলকাতা ফ্র্যাঞ্চাইজি সরাসরি তাঁকে দলের সাথে যোগ দিতে বলেছিল।
কর্নাটকের এই বোলার আইপিএলে সাতটি ম্যাচ খেলে ম্যাচপ্রতি ২৬.০০ গড়ে ও ১৬.৮০ স্ট্রাইকরেটে দশটি উইকেট নিয়েছেন। তার ওভারপ্রতি রান খরচের মাত্রা ছিল ৯.২৮। আইপিএল ২০১৯ আসর যেহেতু দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে হতে যাচ্ছে তাই ঐখানের কন্ডিশনে এমনও হতে পারে যে ৪ জন পেসারকে দলে রাখা যেতে পারে। তাই প্রসিধ হয়ে উঠতে পারেন বেঙ্গালোরুর অন্যতম ভরসার প্রতীক।
৪। কাইল অ্যাবট
প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের গতির ঝরে কাবু করার টোটকা বেশ ভালোই জানেন কাইল অ্যাবট। তার সুইং সামাল দিতে সাধারণত হিমশিম খেতে হয় বিশ্বের বাঘা বাঘা ব্যাটসম্যানদের।
দক্ষিণ আফ্রিকার জার্সি গায়ে এখন পর্যন্ত ২১টি টি-২০ ম্যাচ খেলে ২৬টি উইকেট নেয়া এই পেসারের বোলিং গড় ২২.২৬। অন্যদিকে স্ট্রাইকরেট ও ওভারপ্রতি গড় যথাক্রমে ১৬.৭ এবং ৭.৯৬। তাছাড়া বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক লিগে ৯৭ ম্যাচে নিয়েছেন ৮৮ উইকেট।
সুতরাং, কন্ডিশন কিংবা অ্যাবটের ঘরের মাঠেই যেহেতু আইপিএলের ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে তাই বেঙ্গালোরু ফ্র্যাঞ্চাইজি তাঁর কাছ থেকে বাড়তি সুবিধা পেতেই পারে।
৫। মোইসেস হেনরিক্স
সাড়া বিশ্বে টি-২০ লিগ খেলে বেড়ানো অজি অলরাউন্ডার হেনরিক্স অভিজ্ঞতার ঝুলি বেশ বড় করেছেন ইতোমধ্যেই। বল হাতে প্রতিপক্ষকে গুঁড়িয়ে দেয়ার পাশাপাশি ব্যাট হাতেও নৈপুণ্য দেখানো এই অলরাউন্ডারের উপর প্রত্যাশার পারদ একটু উর্ধ্বমুখী করে রাখতে পারে বেঙ্গালোরু ফ্র্যাঞ্চাইজি।
বিরাট কোহলির নেতৃত্বে থাকা দলটির মিডল অর্ডারের দায়িত্ব যদি হেনরিক্সকে দেয়া হয় তাহলে আস্থার প্রতিদান হয়তো দিতে পারবেন তিনি। তাই আইপিএলের আগামী আসরে রয়্যাল চেলেঞ্জার্স বেঙ্গালোরুর তাবুতে যুক্ত করাই যেতে পারে অজি এই ক্রিকেটারের নাম।