চরম ক্ষুব্ধ কোহলি, ধাওয়ান! কারণ জানলে আপনিও রেগে যাবেন 1

শাসনের নামে বাবা-মা’য়ের অত্য়াচার আর পড়াশোনা করানোর নামে অভিভাবকদের যথেচ্ছাচার – প্রায় সব শিশুকেই সহ্য় করতে হয়েছে। আমরা যারা আজ বড় হয়েছি, বুঝতে শিখেছি, তারা এখনও ভেবে অবাক হয়ে যাই, এটাও কি সম্ভব? যে বাবা-মা’য়ের কাজ শিশুকে সকল অবস্থা থেকে রক্ষা করা, সেই বাবা-মা’র হাতে বেদম পিটুনি। কারণ, পড়তে না ইচ্ছে করা, কখনও আবার পড়া বুঝতে না পেরে ভুল করা। দিনদিন সেই অত্য়াচারটা যথেচ্ছারে পরিণত হয়ে যাচ্ছে। বাবা-মা নিজে কতটা জানেন বা বোঝেন, তা বিচার না করেই শিশু কেন পারল না – তার চুলচেরা বিশ্লেষণ করতে যান। চলে দারোগার মতো শাসন আর পুলিশের থার্ড ডিগ্রি’র মতো মার। যেন কোনও জটিল মার্ডার মিস্ট্রি আজই সলভড না করতে পারলে চাকরি চলে যাবে। না আসলে, চাকরি চলে যাওয়া নয় – ব্য়াপারটা ওই অন্য জায়গায়, বন্ধু মহলে কম্পিটিশনে হেরে যাওয়া। রেষারেষির ওই লড়াইতেই বাবা-মা ভুলে যান নিজের সন্তানের প্রতি তাদের আসল কর্তব্যটা। মারধোর করে কোনও দিন শিশুকে শাসন করা যায় না বা সমস্য়ার সমাধান হয় না, এটা বেশিরভাগ বাবা-মা’ই বুঝতে চান না।
শনিবার সোশ্য়াল নেটওয়ার্কিং সাইট ট্য়ুইটারে এই নিয়ে একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন দুই ভারতীয় ক্রিকেটার – শিখর ধওয়ান ও রবিন উথাপ্পা। ভিডিও’তে দেখা যাচ্ছে, একটি ছোটো বাচ্চা মেয়েকে পড়াতে বসিয়ে শাসন করার নামে তার ওপর অকথ্য় অত্য়াচার করছে তার মা। বছর তিনেকের শিশুটি সংখ্যা চিনতে ভুল করলেই তার ওপর নেমে আসছে চড়-থাপ্পড়ের প্রহার। আর এই ট্য়ুইটি বেশ ভাইরাল হয়েছে। ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলিও ইনস্টাগ্রামে এই ভিডিওটি পোস্ট করেছেন। সঙ্গে কড়া বার্তা ও আবেদন জানিয়েছেন সেইসব বাবা-মা’য়ের প্রতি, যাঁরা নিজের সন্তানের ওপর অত্য়াচার চালান শাসনের নামে। সঙ্গে আবেদন করা হয়েছে শিক্ষিত সমাজের সমস্ত তথাকথিত নাগরিকদেরকেও। শাসন করার নাম করে বাচ্চাদের ওপর অমানবিক আচরণ এখনই বন্ধ করা হোক।
বিরাট তাঁর বার্তায় লিখেছেন, ”শিশুটির যন্ত্রণা আর রাগকে উপেক্ষা করেই চলেছে মা। শিশুকে শেখাতে হবে এই ইগোটাই এমন বড় হয়ে গিয়েছে যে দয়ামায়া নামক বস্তুটাই শরীরে নেই অভিবাবকের। অত্য়ন্ত, দুঃখজনক ব্য়াপার। ভয় দেখিয়ে শিশুকে কখনও শেখানো যায় না। এটা অত্য়ন্ত বেদনাদায়ক।
শিখর ধওয়ান তাঁর ট্য়ুইটে লিখেছেন, ”আমি অভিভাবকদের কাছে আবেদন করছি, নিজের সন্তানদের সবসময় ধৈর্য্য়শীল হোন। সব শিশুকেও তার নিজের জায়গা দেওয়া উচিত বেড়ে ওঠার জন্য়। এভাবে ওদের প্রহার বা তিরস্কার করবেন না।”

অন্য়দিকে উথাপ্পা ট্য়ুইট করেছেন, ”অত্য়ন্ত বেদনাদায়ক। শিশুদের এভাবে বড় করা যায় না। এটা বন্ধ হওয়া দরকার। আমি প্রার্থনা করছি আপনাদের কাছে, আসুন ভয় দেখিয়ে নয়, ভালোবাসা দিয়ে শিশুদের বড় করে তুলি আমরা।”

ভারতের অন্য়ান্য় ক্রিকেটাররাও এই বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন এবং প্রতিটি অভিভাবকের কাছে অনুরোধ করেছেন শিশুর ওপরে অত্য়াচার না করে, তাকে বুঝতে চেষ্টা করতে।
উল্লেখ্য়, ভারতীয় দলের ওপেনিং ব্য়াটসম্য়ান শিখর ধওয়নের একটি ছেলে রয়েছে। তার নাম জোরাবর। ক্রিকেট খেলতে গিয়ে বাবা ভারতীয় দলের সঙ্গে যে দেশ সফরে যান, তাঁর সঙ্গে সেও ঘুরে বেড়ায়। উথাপ্পা গতমার্চে তাঁর বহুদিনের বান্ধবী ও প্রাক্তন টেনিস খেলোয়াড় শীতল গৌতম কে বিয়ে করেছেন। তাঁদের কোনও সন্তান নেই এখনও। আর বিরাট কোহলির ব্য়াপারে নতুন করে কিছু বলার নেই। তিনি এখনও অবিবাহিত।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *