কিংবদন্তি খেলোয়াড়ের মৃত্যুতে শোকাহত ক্রিকেট মহল 1

চলে গেলেন ইংল্য়ান্ডের প্রবাদপ্রতিম ক্রিকেট ব্য়ক্তিত্ব ডাগ ইনসোল। গত শনিবার রাতে মারা যান এই প্রাক্তন ইংলিশ ক্রিকেটার ও প্রশাসক। মৃত্য়ুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল একানব্বই বছর। ক্রিকেটারের চেয়ে প্রশাসক হিসেবেই বেশি জনপ্রিয় ছিলেন ডাগ। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে জাতীয় দলের হয়ে বেশি ম্য়াচ খেলেনি অবশ্য় ক্রিকেট জীবনে। নটি টেস্টে ৪০৮ রান করলেও নিজের সময়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে দাপটে শাসন করছিলেন ডাগ। সেঞ্চুরির সংখ্য়া চুয়ান্ন। পঁচিশ হাজারেরও বেশি রান করেছিলেন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে। ক্রিকেট জীবনে ইতি টানার পরও ক্রিকেটকে ছেড়ে যেতে পারেননি। ইংলিশ কাউন্টিতে এসেক্স ক্রিকেট ক্লাবের সভাপতি হন। মারলিবোন ক্রিকেট ক্লাবেও (এমসিসি), একই পদ সামলেছিলেন ডাগ। দক্ষ প্রশাসক হিসেবে নিজের ছাপ রেখেছেন এই প্রবাদপ্রতিম ইংরেজ ক্রিকেটারটি। তাঁর ব্য়ক্তিত্বের জন্য় আজও ইংল্য়ান্ডের ঘরোয়া ক্রিকেটে সমান জনপ্রিয় ডাগ ইনসোল।

এমসিসি কমিটিতে ক্রিকেট জীবনের পরবর্তী চল্লিশটা বছর অতিবাহিত করেন ডাগ। ২০০৬ সালে এই ক্লাবের সভাপতি নির্বাচিত হন। জাতীয় দলের হয়ে বেশি করে অবদান রাখতে না পারলেও, নির্বাচক হিসেবে সেই আক্ষেপটা পুষিয়ে দিয়েছিলেন। দীর্ঘ ঊনিশ বছর ইংলিশ ক্রিকেটে নির্বাচকের পদ সামলেছিলেন এই দক্ষ ক্রীড়া প্রশাসক। তাঁর আমলেই ব্য়াটিং লেজেন্ড জিওফ্রি বয়কটের দল থেকে বাদ পড়ার ঘটনা ঘটে (দ্বিশতরান করার পরেও)। দক্ষিণ আফ্রিকা সফর থেকে ব্য়াসিল ডিঅলিভেরার দলে জায়গা না পাওয়া নিয়ে হওয়া ইংলিশ ক্রিকেটের সেই বিতর্কও ডাগের আমলেই দেখেছিল ক্রিকেট বিশ্ব। রঙিন বলের একদিনের ক্রিকেটের জনক কেরি প্য়াকার যখন ওয়ার্ল্ড সিরিজ ক্রিকেট উপহার দেন, সেই সময় টেস্ট অ্য়ান্ড কাউন্টি ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্য়ান ছিলেন এসেক্সের এই বর্ণময় ক্রিকেট চরিত্র।

আমৃত্য়ু ক্রিকেটের সঙ্গে নাড়ির যোগ ছিল ডাগের। এসেক্সের এই কিংবদন্তি একাধারে অধিনায়ক, চেয়ারম্য়ান ও সভাপতির পদ সামলে মারা যাওয়ার সময় পর্যন্ত এই কাউন্টি ক্লাবের সেবায় নিযুক্ত ছিলেন। ডাগের মৃত্য়ুতে গভীর শোকাহত এসেক্স ক্লাব। তাদের বিবৃতিতে ক্লাব তরফে জানায়, অত্য়ন্ত দু:খের সঙ্গে এসেক্স কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাব ডাগ ইনসোলের প্রয়ানের খবর জানাচ্ছে। ডাগ আমাদের ক্লাবের প্রাক্তন ক্রিকেটার, অধিনায়ক, চেয়ারম্য়ান ও সভাপতি ছিলেন। শনিবার রাতে ঘুমের মধ্য়েই ডাগ আমাদের ছেড়ে চলে যান। তাঁর ক্রিকেট কেরিয়ার ও অসাধারণ প্রশাসনিক দক্ষতার জন্য় ডাগকে সবাই ভালোবেসে মিস্টার এসেক্স বলে ডাকত।

উল্লেখ্য়, ইংল্য়ান্ডের হয়ে ১৯৫০ সালে ডাগ ইনসোল আন্তর্জাতিক মঞ্চে পা রাখেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে অভিষেকের সাত বছর পর অবসর নেন। ১৯৫৭ সালে জীবনের শেষ ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে শূন্য় রানে আউট হয়েছিলেন এসেক্স ক্রিকেটের এই প্রবাদপুরুষ। ১৯৫৬ সালে উইজডেনস ক্রিকেটার অফ দ্য় ইয়ার সম্মানে ভূষিত হন। ১৯৭৯ সালে ক্রিকেটের প্রতি তাঁর ভালোবাসার স্বীকৃতি হিসেবে সিবিই সম্মান দিয়ে ডাগকে সম্মানিত করা হয়।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *