লম্বা কালো চুল এবং সর্বদা মুখে থাকা মিষ্টি হাঁসি লাজুক ক্রিকেটার লক্ষ্মীপতি বালাজির কথা কমবেশি সব ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমী মানুষ জানেন। তাঁর ওই লাজুক হাঁসি অবশ্য আজও বহু সুন্দরীদের হৃদয়ে ঝড় তোলে। মাঠে অবশ্য তাঁর বিষধর খতরনক ডেলিভারিগুলি বিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের রীতিমতো রাতের ঘুম কেড়ে নিত। বিশেষ করে জাতীয় দলেও তাঁর বোলিং দাপট দেখেছে গোটা দেশ। যদিও চোটের কারণে ভারতীয় দলের হয়ে দীর্ঘদিন বালাজি বোলিং করে যেতে পারেননি। পরে অবশ্য চোট সারিয়ে জাতীয় দলে ফেরার বিস্তর চেষ্টা চালিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু জাতীয় দলে তাঁর জায়গায় একাধিক বিকল্প ক্রিকেটার থাকায় ফেরা আর হয়নি। যার ফলে তাঁকে কেরিয়ারের বেশিরভাগ সময়টা নীল আসমানি জার্সি ছাড়াই খেলে যেতে হয়েছিল।
তার আগে ২০০৪ সালে টিম ইন্ডিয়ার হয়ে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে নজরকাড়া বোলিং করে রাতারাতি তারকায় পরিণত হন চেন্নাইয়ের এই মিডিয়াম পেসারটি। সেই সিরিজে বালাজির বোলিং শুধু তাঁর সমর্থকদের নয়, নজর কেড়েছিল তাঁর সমালোচকদেরও। বালাজির বোলিং যতটা ক্ষুরধার ছিল, ততটাই মজাদার ছিল তাঁর প্রেমকাহিনীও। বাস্তবে তিনি যতটা লাজুক ছিলেন, বালাজি নিজের প্রেম পর্বটাও ঠিক ততটাই গোপনে রেখেছিলেন। বিয়ের ৪ বছর পর তাঁর ভক্তরা জানতে পারেন, বালাজি কাউকে কিছু বুঝতে না দিয়ে নিজের একমাত্র বান্ধবী প্রিয়ার সঙ্গে বহুদিন আগেই বিবাহ পর্ব চুকিয়ে ফেলেছিলেন। তিনি লাভ ম্যারেজ করেছিলেন। তাও আবার চেন্নাইয়ের এক সুপার মডেল প্রিয়া থালুরের সঙ্গে।
২০০৯ সালে একটি ফ্যাশন শো’য়ে আমন্ত্রিত ছিলেন লক্ষ্মীপতি বালাজি। সেই ফ্যাশন শো’য়ে তিনি প্রথম দেখেন প্রিয়াকে। সুপার মডেল প্রিয়ার সৌন্দর্য দেখে সেদিনই প্রেমের সাগরে ডুব দিয়েছিলেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের এই নির্ভরযোগ্য পেসারটি। সেই ফ্যাশন শো’তে বালাজিকেও দেখে প্রেমে পড়ে যান চেন্নাইয়ের এই নামী মডেলটি। এরপর দু’জনের মধ্যে ভালো একটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ধীরে ধীরে সেটা প্রেমে পরিণত হয়। এরপর চেন্নাইয়ে হওয়া বহু ম্যাচে তিনি বালাজিকে সমর্থন করার জন্য প্রায়ই স্টেডিয়ামে পৌঁছে যেতেন। এমনকি আইপিএল চলাকালিনও প্রিয়াকে বহুবার মাঠে এসে বালাজির হয়ে গলা ফাটাতে দেখা গিয়েছিল। এরপর তাঁরা ২০১৩ সালে লুকিয়ে বিয়ে করে ফেলেন। যদিও বিয়ের ৪ বছর আগে এই দুই হট কাপল একে অপরের সঙ্গে বহুবার ডেট করেছেন।
উল্লেখ্য, ২০০৩ সালে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারতীয় দলের জার্সি গায়ে অভিষেক ঘটেছিল চেন্নাইয়ের এই মিডিয়াম পেসারের। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার পাশাপাশি মোট ৮টি টেস্ট ম্যাচে অংশগ্রহণ করে মোট ২৭টি উইকেট তুলে নিতে সমর্থ হয়েছিলেন বালাজি। ৭৬ রান দিয়ে ৫ উইকেট তুলে নেওয়াটা ছিল বালাজির কেরিয়ারের সেরা পারফরম্যান্স। ৩০টি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে মোট ৩৪টি উইকেট তুলে নিয়েছিলেন তিনি। ওয়ানডে তে সেরা পারফরম্যান্স ৪৮ রানে ৪ উইকেট। ২০১৬ সালে তিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায় নিয়ে ফেলেন। তারপর থেকে তিনি আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যান তাদের বোলিং কোচ হিসেবে। যদিও আইপিএলে তিনি কলকাতা নাইট রাইডার্সের পাশাপাশি চেন্নাই সুপার কিংসের হয়েও অনেকটা সময় খেলেছেন লক্ষ্মীপতি বালাজি।