অবশেষে এত কাঠখড় পোড়ানোর পর ভারতীয় ক্রিকেট দলের নতুন কোচ হিসেবে বেছে নেওয়া হল রবি শাস্ত্রীকেই। গত ১১ জুলাই বিসিসিআই এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়ে দেয়, রবি শাস্ত্রীকে জাতীয় দলের কোচ হিসেবে আগামী দু’বছরের জন্য নিয়োগ করা হল। পাশাপাশি ভারতীয় ক্রিকেট দলের বোলিং কোচ হিসেবে জাহির খান এবং ব্যাটিং পরামর্শদাতা হিসেবে রাহুল দ্রাবিড়কেও নিয়োগ করা হল। ভারতীয় দল যখন বিদেশ সফর করবে, দ্রাবিড় মূলত তখনই সিনিয়র দলের হয়ে কাজ করবেন। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের উপদেষ্টা কমিটির এহেন সিদ্ধান্ত অনেকেই মেনে নিলেও, সেটা মন থেকে একটুও মেনে নিতে পারেননি ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন মারকুটে ব্যাটসম্যান বীরেন্দ্র সেহওয়াগের ছেলেবেলার কোচ অমরনাথ শর্মা। ভারতীয় দলের কোচ হিসেবে শাস্ত্রীর নিয়োগের বিষয়টিতে তিনি রীতিমতো আপত্তি জানিয়েছেন।
সম্প্রতি এক প্রতিক্রিয়ায় নজফগড়ের নবাব সেহওয়াগের ছোটবেলার কোচ অমরনাথ শর্মা বলেন, “ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের উপদেষ্টা কমিটির সদস্যরা স্কাইপির মাধ্যমে রবি শাস্ত্রী সহ বাকি সবার কোচের পদের জন্য ইন্টারভিউ নিয়েছে। সেখানে একমাত্র সেহওয়াগ মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে বিসিসিআইয়ের অফিসে এসে ইন্টারভিউ দিয়ে গিয়েছে। এতে বোঝা যাচ্ছে, বোর্ড জাতীয় দলের কোচ বাছার ক্ষেত্রে কি চিন্তিত। যখন আপনার সামনে এসে কেউ ইন্টারভিউ দেয়, আপনি তাঁর ব্যক্তিত্ব উপলব্ধি করার পাশাপাশি নানান বিষয়ে অনেক প্রশ্ন করতে পারেন। সেখানে স্কাইপির মাধ্যমে একজনকে ইন্টারভিউ নিলে খুববেশি প্রশ্ন করা যায় না, পাশাপাশি একজন মানুষের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সেভাবে লক্ষ্য করা যায় না। কিন্তু বোর্ডের উপদেষ্টা কমিটি সেটাই করলো। আমি মনে করি, এভাবে স্টাইপির মাধ্যমে সঠিক অর্থে জাতীয় দলের জন্য কোচ নির্বাচন সম্ভব নয়।”
শুধু কোচের পদপ্রার্থীদের স্কাইপির মাধ্যমে ইন্টারভিউ নেওয়ার পদ্ধতির বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলেননি সেহওয়াগের ছেলেবেলার কোচ, তিনি বোর্ডের উপদেষ্টা কমিটির অন্যতম সদস্য শচীন তেন্ডুলকরেরও সেই স্কাইপির মাধ্যমে ইন্টারভিউ নেওয়ার বিষয়টির বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলেছেন। এ বিষয়ে কোচ অমরনাথ আরও বলেন, “কমিটির বাকি সদস্যদের মতো শচীনেরও উচিত ছিল মুম্বইয়ে সশরীরে উপস্থিত হয়ে কোচের পদপ্রার্থীদের ইন্টারভিউ নেওয়া। কারণ, তাতে কমিটির বাকি দুটি সদস্যদের সঙ্গে তিনি আরও গভীরে গিয়ে যাবতীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে পারতেন। আর সেখানে শচীন উপস্থিত থাকলে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের পাশাপাশি ভিভিএস লক্ষ্মণের ওপর থেকেও কোচ বাছাইয়ের অনেকটা মানসিক চাপ কমে যেত।”
উল্লেখ্য, কোহলিদের নতুন কোচ নির্বাচনের জন্য গত ১০ জুলাই বোর্ডের উপদেষ্টা কমিটি কোচের পদে পদপ্রার্থী হিসেবে মোট পাঁচজনের ইন্টারভিউ নেন। যাদের মধ্যে চারজন (রবি শাস্ত্রী, লালচাঁদ রাজপুত, রিচার্ড পাইবাস এবং টম মুডি) স্কাইপির মাধ্যমে ইন্টারভিউ দিয়েছিলেন। একমাত্র বীরেন্দ্র সেহওয়াগ সেখানে সশরীরে গিয়ে ইন্টারভিউ দিয়ে আসেন। তা সত্ত্বেও বোর্ড রবি শাস্ত্রীকে ভারতীয় দলের নতুন কোচ হিসেবে বেছে নেয়।