ম্যাচ ফিক্সিংয়ের সঙ্গে যুক্ত গুজরাট লায়ন্সের তিন ক্রিকেটার, ধরা পড়লো সিসি টিভি ক্যামেরায়! 1

কানপুর পুলিশের জেরায় স্পট ফিক্সিং কাণ্ডে জড়িত রমেশ কুমার আগেই জানিয়েছিলেন, গুজরাট লায়ন্সের দু্ই ক্রিকেটার বুকিদের কথা মতো ‘কাজ’ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। এমন সব তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ চলতি আইপিএলের ম্যাচ ফিক্সিং কাণ্ডের তদন্তের গতি অনেকগুন বাড়িয়ে দিয়েছিল।  সেই তদন্তের একটা তথ্য অবশ্য শেষমেশ ঘুরিয়ে দিল যাবতীয় ঘটনার মোড়। যে হোটেলে অভিযান চালিয়ে কানপুর পুলিশ গড়াপেটা কাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে তিন জন বুকিকে গ্রেফতার করেছিল, সেখানকার সিসি টিভি ফুটেজে উঠে এলো সত্যিটা। সেখানে দেখা গিয়েছে, হোটেলের ১৭ তলার যে রুমে থানের ব্যবসায়ী রমেশ নয়ন শাহ ছিলেন, সেই ১৭৩৩ নং রুমে ম্যাচের ঠিক একদিন আগে প্রবেশ করেন গুজরাট লায়ন্সের তিন ক্রিকেটার। এর ফলে প্রাথমিকভাবে এবারের আইপিএলের ম্যাচ ফিক্সিংয়ের সঙ্গে নাম জড়িয়ে গেল গুজরাট লায়ন্সের পাশাপাশি তাদের দলের দু্ই ক্রিকেটারের।

এবারে ক্রমে কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে কেউটে বেরিয়ে পড়ার উপক্রম। আইপিএলের বেটিংয়ের তদন্ত যেভাবে এগিয়ে চলেছে, তাতে রাঘব বোয়ালও জালে পড়ে ‌যেতে পারে। গত ১০ মে কানপুরে হয়ে যাওয়া দিল্লি ডেয়ারডেভিলস এবং গুজরাট লায়ন্সের ম্যাচের ঠিক পরের দিন ল্যান্ডমার্ক হোটেলে যেখানে দুই দলের ক্রিকেটাররা ছিল, সেখান থেকে পুলিশ গ্রেফতার করে রমেশ নয়ন শাহকে। যিনি আবার অনূর্ধ্ব ১৯ ভারতীয় ক্রিকেট দলের হয়ে কোনও একটা সময় খেলেছিলেন। পুলিশের পাশাপাশি বোর্ডের দুর্নীতি দমন শাখার আধিকারিকরা্ও নজর রাখছিল ফিক্সিংয়ের সঙ্গে যুক্ত থাকা আরও দু’জনের ওপরে। কানপুর স্টেডিয়ামে আইপিএল-এর ম্যাচে হোর্ডিং লাগানোর বরাত পা্ওয়া আরও এক অভিযুক্ত রমেশ কুমারকে পুলিশি জেরা করে গুজরাত লায়ন্সের দু্ই ক্রিকেটারের নাম জানতে পারে। যাবতীয় বিষয় মাথায় রেখে কানপুর পুলিশ গত ৯ মে-র সারাদিনের ফুটেজ চেয়ে বসে হোটেল কর্তৃপক্ষের কাছে।  সেখানে দেখা যায়, রাজস্থানের আজমেড় থেকে পুরো গড়াপেটা কাণ্ড পরিচালনা করা বুকি বান্টির সঙ্গে রমেশ নয়ন শাহ-র রুমে প্রবেশ করে সুরেশ রায়নার গুজরাট দলে নিয়মিত সুযোগ পাওয়া তিন ক্রিকেটার।

অনেকটাই বাড়লো চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পুরস্কার মূল্য, চ্যাম্পিয়ন দল কত পাবে, জানলে চমকে যাবেন

 

পুলিশ গুজরাট দলের ওই ক্রিকেটারদের চিহ্নিত করতে পারলেও, এখনও তাদের নাম প্রকাশ করেনি। তবে ম্যাচ ফিক্সিং কাণ্ডে জড়িতদের কাছ থেকে যে দু’জন ক্রিকেটারদের নাম জানতে পেরেছিল পুলিশ, সেই দু’জনকেও ওই ফুটেজে দেখা গিয়েছে। এই তিনজন ক্রিকেটারের মধ্যে দু’জনকে বেটিং কাণ্ডে যুক্ত থাকার অপরাধে দু’বছর সাসপেন্ড হওয়া চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে শেষ আইপিএল খেলতে দেখা গিয়েছিল। আর একটা সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, ২০১৫ সালে প্রাক্তন বিচারপতি মুকুল মুদগল আইপিএলে গড়াপেটা কাণ্ডে জড়িত ১৩ ক্রিকেটারের যে তালিকা সুপ্রিম কোর্টে বন্ধ খামে জমা দিয়েছিলেন, সেখানেও নাকি গুজরাট লায়ন্সের এই দুই ক্রিকেটারের নাম ছিল। তদন্তের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য পুলিশ আপাতত গুজরাট লায়ন্সের দুই ক্রিকেটারকে জিজ্ঞাসাবাদ করার প্রক্রিয়া শুরু করার ব্যাপারে প্রস্তুতি নিচ্ছে। পাশাপাশি আজমেড়ের বুকি বান্টির খোঁজেও তল্লাশী শুরু করে দিয়েছে তারা।

ট্যুইটারে পান্ডিয়া ভাইদের ঝামেলা মেটাতে গিয়ে একি বললেন সেহবাগ!

 

উল্লেখ্য, কানপুর পুলিশ অভিযুক্ত রমেশ নয়ন শাহ-র মোবাইল ঘেঁটে আগে্ই জানতে পেরেছিল, সে বান্টিকে ম্যাসেজ করে জানিয়েছিল, গুজরাটের কয়েক’জন ক্রিকেটাররা নাকি তাদের কথা মতো চলার ব্যাপারে সম্মতি জানিয়েছে। পাশাপাশি তারা ২০০-র বেশি স্কোর তুলে নিলেও, ম্যাচ হারবে বলে জানিয়েছে। বাস্তবে অবশ্য সেটাই ঘটেছিল। প্রথম ইনিংসে গুজরাট ১৯৫ রান করেও, শেষ ওভারে ২ উইকেটে দিল্লির কাছে ম্যাচটা হেরে বসলো। শেষ ওভারে ম্যাচ জিততে দিল্লির বাকি ছিল মাত্র ৯ রান। সেখানে অমিত মিশ্র পর পর দুটি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দিল্লির হয়ে ম্যাচ জিতে নেন।

 

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *