আইপিএল ২০১৭ঃ হায়দ্রাবাদে প্রায় সমশক্তিমান দুই দল মাঠে নামার আগে দেখে নেওয়া যাক কোন দলের পাল্লা ভাড়ি 1
গৌতম গম্ভীর ও ডেভিড ওয়ার্নার

দশম আইপিএলে প্রথম পর্যায়ের খেলাগুলিতে কার্যত তিনটি দলের দাপট দেখা গিয়েছে। মুম্বই ইন্ডিয়ান্স, কলকাতা নাইটা রাইডার্স ও সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ। এখন আইপিএলের বেশ কিছু ম্যাচ বাকি থাকলেও এটা বলতে সন্দেহ নেই মুম্বই ও কেকেআর প্লেঅফে যাচ্ছেই। বিরাট কিছু অঘটন না ঘটলে সানরাইজার্সও চলে আসবে প্লেঅফে। কাজেই বোঝা যাচ্ছে এই তিনটি দল কীভাবে নিজের প্রতিপত্তি বিস্তার করেছে এই মরশুমের আইপিএলে।

রবিবার এই মহাশক্তিধর দলের মধ্যে দুই দল, সানরাইজার্স ও কেকেআর মহারণে নামতে চলেছে। একদিকে যেমন কেকেআর পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষ স্থান বজায় রাখার চেষ্টা করবে, অন্যদিকে সানরাইজার্সও জিতে পয়েন্ট তালিকায় নিজেদেরকে ওপরের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবে।

আইপিএল ২০১৭ঃ রবিবারের কেকেআর বনাম সানরাইজার্স ম্যাচে দুই দলের গভীরতা

দুটি দল একনজরে –

সানরাইজার্স – ঘরের মাঠে দারুণ প্রদর্শন করে এই দল। কিন্তু শেষ ম্যাচে কিংস ইলেভেনের ঘরের বাইরে খেলেও যে জয় পেয়েছে ওয়ার্নাররা, তা তাদের আত্মবিশ্বাস অনেকটাই বাড়িয়েছে। এই ম্যাচে ২০৭ রান করেছিল সানরাইজার্স। ২৬ রানে ম্যাচটি জিতেওছিল কমলা ব্রিগেড। শিখর ধবন ফর্মে ফিরে আসায় ওয়ার্নারের উপর থেকে চাপ কিছুটা কমল। রবিবার ঘরের মাঠেই খেলবে এই দল।

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি বয়কট করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কুম্বলে ও বিরাটের মতামত নেবে বিসিসিআই

কেকেআর –গৌতম গম্ভীরের নেতৃত্বে এই দল যেভাবে খেলছে তাতে বিপক্ষ দলগুলির জন্য দয়া হয়। শেষ ম্যাচেও দিল্লির বিরুদ্ধে একটা সহজ জয় ছিনিয়ে নিয়েছে। গম্ভীর ও নারিনের বিস্ফোরক শুরু করার পর রবীন উথাপ্পার আগমন কোনও লক্ষ্যমাত্রাকেই রেয়াত করে না। বোলিং বরাবরই এই দলের গর্ব ছিল। এবার ব্যাটিংয়েও ধারাবাহিকভাবে বিস্ফোরক প্রদর্শন দলের আত্মবিশ্বাসকে মধ্য গগণে রেখেছে।

দুই দলের থিঙ্ক ট্যাঙ্ক দেখে নেওয়া যাক –

সানরাইজার্স – এই মরশুমে মিডল ওর্ডার ব্যাটিং নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়েছিল এই দলকে। যুবরাজ সিংহ প্রথম ম্যাচে ভাল খেললেও পরের ম্যাচ গুলিতে যথেষ্ট মলিন লেগেছে তাঁকে। তবে কিউই অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন চলে আসায় মিডল ওর্ডারের সমস্যা অনেকটা মিটেছে। ইতিমধ্যেই উইলিয়ামসন নিজের করিশমা দেখিয়ে দিয়েছেন। বোলিংয়ে রসিদ খান, ভুবনেশ্বর কুমারই গোটা দায়িত্ব নিয়ে নিয়েছে। এছাড়া আশিষ নেহরার মত অভিজ্ঞ বোলিং অস্ত্র তো আছেই।

 

বিশেষ এই কারণে খেলায় মনোসংযোগ করতে অসুবিধা হচ্ছে নাইট নেতা গম্ভীরের!

কেকেআর – সুনীল নারিনকে দিয়ে ওপেনিং করানো থেকে শুরু করে কৌলটার নাইলকে আনা ট্রেন্ট বোল্টের বদলে, দুটি সিদ্ধান্তই বেশ সফল হয়েছে এই দলের। দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের ম্যাচেও এই অসাধারণ কম্বিনেশনের কোনও বদল করেনি কেকেআর। এবং আর কোনও বদল হবে বলেও মনে হচ্ছে না। শুধু গ্রান্ডহোমের জায়গায় দলে আনা হতে পারে বাংলাদেশের অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানকে। তবে সেই ভাবনাতেও এখনও কোনও শীলমোহর পড়েনি।

দুই দলের শক্তি –

সানরাইজার্স – আগের আলোচনার মাধ্যমেই এই দলের শক্তি সম্বন্ধে ধারণা তৈরি হচ্ছে। ব্যাটিংয়ে ওয়ার্নার, ধবন, উইলিয়ামসন এবং বোলিংয়ে ভুবনেশ্বর কুমার, রসিদ খান রয়েছে এই দলে। এর থেকে বড় শক্তি আর কী হতে পারে। ভুবনেশ্বর এই মুহুর্তে আইপিএলের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী।

কেকেআর – রবীন উথাপ্পা বিগত দুটি ম্যাচে যে ফর্মে নিজের পরিচয় দিয়েছেন তা থেকেই এই দলের সমস্ত চিন্তা দূরে সরে যায়। মরশুমের প্রথম কয়েকটা ম্যাচে উথাপ্পাকে এই মেজাজে দেখা যায়নি। তবে এবার তিনি আসল গতি খুঁজে পেয়েছেন। এছাড়া গৌতম গম্ভীর ও নারিনের বিস্ফোরক ওপেনিং অনেকটা শক্তিশালী করেছে কেকেআরকে।

দলের পরিবর্তন–

সানরাইজার্স – অন্যের মাঠে সদ্য জিতে আসা এই কম্বিনেশনকে ভাঙতে চায় না এই দল। তবে যদি বদল করতেই হয় তো, দীপক হুডার জায়গায় বিপুল শর্মাকে নেওয়া হতে পারে।

কেকেআর – ধারাবাহিকভাবে প্রায় একই কম্বিনেশনের সঙ্গেই থেকে এসেছে কেকেআর। তাই কেকেআরও বর্তমান টিম কম্বিনেশনের বদল ঘটাবে না। তবে আগামী গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচগুলির কথা মাথায় রেখে ন্যাথন কৌলটার নাইলকে বিশ্রাম দেওয়া যেতে পারে।

মুখোমুখি হওয়ার ফল –

এই আইপিএলে ইডেন গার্ডেন্স অর্থাৎ কেকেআরের ঘরের মাঠে একটি ম্যাচ খেলে নিয়েছে এই দুই দল। সেই ম্যাচে খুব সহজ ভাবেই কেকেআর সানরাইজার্সের বিরুদ্ধে জয়ী হয়েছিল।

ভবিষ্যতবানী –

আইপিএলের এই কঠিন জায়গায় এসে কোন দল জিতবে, তা আগে থেকে বলা সত্যিই খুব মুশকিল। বিশেষ করে দুটি প্রায় সমান শক্তিধর দল যখন যুদ্ধে নামতে চলেছে। ঘরের মাঠ বলে সানরাইজার্স একটু বেশি সুবিধা পাবে। তবে কেকেআরের জয়যাত্রা ও আত্মবিশ্বাস দেখে বলাই যায় এই ম্যাচে কেকেআরের জেতার সম্ভাবনাই বেশি।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *