অসময়ে যে মানুষটিকে সবচেয়ে বেশি দরকার ছিল যুবরাজ সিং’য়ের, সেই তিনি এতদিন চুপ করে বসেছিলেন। অবশেষে যুবির ভারতীয় দল থেকে বাদ পড়া প্রসঙ্গে নিজের মত প্রকাশ করলেন ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলি। এনিয়ে কোনও দ্বিমত নেই, দাদা না থাকলে ভারতীয় দলে যুবির দৌড়টা এতদূর নাও এগোতে পারত। সৌরভ জমানাতেই ভারতীয় দলে অভিষেক আর তাঁর হাত ধরেই ভারতের সর্বকালের অন্য়তম সেরা ম্য়াচ ফিনিশার হয়ে ওঠেন যুবি। একটি হিন্দি দৈনিককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দাদা বলেন, ”যুবিকে ভারতীয় দলে ফের খেলতে দেখা যেতে পারে। হ্য়াঁ, ও দলে ফিরতেই পারে। তবে, ওকে লড়াই করতে হবে। আর যুবরাজ যদি ঠিক করে নেয়, ও ভারতীয় দলে ফিরবে, তাহলে ও ভারতীয় দলে ফিরতেই পারে।”
শ্রীলঙ্কা সফরে সীমিত ওভারের সিরিজে যুবরাজকে দলে না রাখায়, বেশ হৈচৈ পড়েছে ক্রিকেট মহলে। প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে কি নির্বাচকদের ঢাল বানিয়ে ভারতীয় দল থেকে যুবরাজকে ছেঁটে ফেললেন কোহলি ও শাস্ত্রী। অস্ট্রেলিয়া সিরিজে প্রথম তিনটি একদিনের ম্য়াচের জন্য় দল ঘোষণা হওয়ার পর দেখা যায়, আবারও যুবি বিবেচনার বাইরে। শ্রীলঙ্কায় দল পাঠানোর সময় বলা হয়েছিল যুবিকে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে। এবার আর কোনও রকম বক্তব্য় রাখেননি নির্বাচকরা। বেঙ্গালুরুর জাতীয় অ্য়াকাডেমিতে ফিটনেস টেস্টে যুবির ফেল করার খবর প্রকাশ হওয়ার পর অনুরাগীদের প্রতিবাদটাও কমে যাচ্ছে আস্তে আস্তে। আগামী দিনে যুবিকে ভারতের জার্সি গায়ে একদিনের ক্রিকেটে ফের দেখা যাবে, নাকি চুপিসাড়ে অবসর নিয়ে তিনি সরে যাবেন, তা সময়ই বলবে। কিন্তু, ওয়াকিবহলের মহলের ধারনা, যুবির আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কেরিয়ারকে কফিনে পুরে শেষ পেরেক শ্রীলঙ্কা সিরিজের দল ঘোষণার সময়ই মেরে দেওয়া হয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে পাঁচ ম্য়াচের একদিনের সিরিজ আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে। প্রথম ম্য়াচ চেন্নাইতে। ভারত কত ব্য়বধানে অস্ট্রেলিয়াকে হারাবে সে প্রসঙ্গে দাদা বলেন, ”ঘরের মাটিতে ভারতীয় দলকে হারানো খুব কঠিন কাজ। তবে, অস্ট্রেলিয়াকে ভারত ৫-০ ফলে হোয়াইটওয়াশ করতে পারবে কি না, এটা বলাও কঠিন। ভুলে গেলে চলবে না, অস্ট্রেলিয়া কিন্তু শক্তিশালী দল।”
জাতীয় নির্বাচকরা যে রোটেশন পলিসি নিয়েছে, তাকে সমর্থন জানিয়েছেন ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক। ”ওরা (নির্বাচকরা) তরুণ ক্রিকেটারদের দিকে নজর দিচ্ছে। খুব ভালো ব্য়াপার। ২০১৯ বিশ্বকাপের আগে উপযুক্ত পদক্ষেপ। তৈরি হওয়ার জন্য় আমাদের হাতে অনেক সময় আছে। হাতে যে অপশন আছে, তাদের সবাইকে সুযোগ দিয়ে দেখে নেওয়া প্রযোজন। তবেই একটা টিম তৈরি করা যাবে।” রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও রবীন্দ্র জাদেজার মতো দুই অভিজ্ঞ স্পিনারকে পরপর দু’টি সিরিজে বিশ্রাম দিয়ে অক্ষর প্য়াটেল, কুলদীপ যাদব ও যুজবেন্দ্র চহলের মতো তরুণ স্পিনারদের পরখ করে নেওয়া ও তাদের তৈরি হতে সময় দেওয়ার জন্য়ও নির্বাচকদের প্রশংসা করছেন দাদা।
এদিকে, আগামী মাসে ফিফা ২০১৭ অনূর্ধ্ব বিশ্বকাপের জন্য় কলকাতার সল্টলেক স্টেডিয়ামকে নতুন রূপ দেওয়া হয়েছে। দাদা বলছেন, ”আমি ইডেন গার্ডেন্সকেও এরকম নতুন রূপ দিতে চাই।” এখানে প্রসঙ্গনীয়, বিসিসিআই’য়ের ক্রিকেট অ্য়াডভাইজরি কমিটির সদস্য় হওয়ার পাশাপাশি দাদা ক্রিকেট অ্য়াসোসিয়েশন অফ বেঙ্গল (সিএবি)-র সভাপতি।